খাদ্য বিষক্রিয়ার জেরে অসুস্থ একাধিক ছাত্র-ছাত্রী চাল বিক্রি থেকে শিক্ষক বদলে রাজ্যে নিয়ে সরগরম চন্দ্রকোনা রোড। মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি
সুমন পাত্র, চন্দ্রকোনারোড :- পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা তিন নম্বর ব্লকের নয়াবসত গ্রাম পঞ্চায়েতের পণ্ডিত রঘুনাথ মুরমু আবাসিক বিদ্যালয়ের খাদ্য বিষক্রিয়ার জেরে অসুস্থ একাধিক ছাত্র-ছাত্রী।
ওই স্কুলের সকলেরই প্রচুর পরিমাণে বমি পায়খানা শুরু হলে স্থানীয় দ্বারিগেড়িয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একজনকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে। এদিন জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে ঐ স্কুলের একাধিক ছাত্র-ছাত্রীকে অসুস্থ চিহ্নিত করেছে। খাদ্যে বিষক্রিয়ার জেরে এই অসুস্থ বলে খবর। ছাত্র-ছাত্রীদের অভিযোগ খারাপ খাবার বলার পরেও খেতে বাধ্য করেছে স্কুলের শিক্ষকরা, স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিনোদবিহারী মন্ডল খাবারের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে তার বক্তব্য কি হয়েছিল খতিয়ে দেখতে হবে তপশিলি উপজাতির ছাত্র-ছাত্রী মিলিয়ে ৪০০ জনের আবাসিক স্কুল এটি তাই এটি একটি জাতীয় ইস্যু হতে পারতো বলে মন্তব্য স্থানীয় বাসিন্দার সনৎ হাঁসদার।
গড়বেতা তিন নম্বর পশ্চিম মন্ডলের বিজেপির বক্তব্য নয়াবসত মানে চাল চুরির অভিযোগ বারবার এসেছে। এক্ষেত্রে ভালো চাল বদলে খারাপ চাল আনার ফলে এমনটা ঘটেছে বলে আমাদের ধারণা। ওই স্কুলে খুব ভালো চাল এসেছিল সেগুলো দেখার পরের লোভ সামলাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ, সেগুলো বিক্রি করে খারাপ চাল খাওয়ানোর ফলস্বরূপ এমনটা ঘটেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের জমানায় এই ঘটনা নতুন নয় এর আগেও ঘটেছে এর পরেও আবার ঘটবে। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইছি। আমরা যেখানে আদিবাসী রাষ্ট্রপতি উপহার দিচ্ছি দেশকে সেখানে আদিবাসীদের প্রতি এহেন অত্যাচার আমরা মানবো না। এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
অপরদিকে তপশিলি উপজাতিদের পক্ষ থেকে ওই স্কুলে তপসিলী উপজাতিতেই শিক্ষক শিক্ষিকা দিয়ে পঠনপাঠন করানো হোক বলে দাবি তুলছে কেউ কেউ। তপশিলি উপজাতিদের ছাত্র-ছাত্রী বলেই খারাপ খাবার খাওয়ানো হয়েছে। এবং জানানোর পরেও বলা হয়েছে ওই খাবারই খেতে হবে।
যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। স্থানীয় শাসকদলের কর্মীদের বক্তব্য কোনো চাল বিক্রি হয়নি যিনি চাল চুরি করতেন তিনি এখন বিজেপিতেই রয়েছেন এবং ছাত্র-ছাত্রীদের অসুস্থ হওয়ার পরেই দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্রছাত্রীদের জন্য যথেষ্ট মানবিক, ঠিক কি ঘটেছে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বিষয়টা খতিয়ে দেখবে স্থানীয় প্রশাসন। এর মধ্যে অযথা রাজনীতি টেনে আনা উচিত নয়।
চন্দ্রকোনা রোড থেকে গোয়ালতোড় রাস্তায় নয়াবসত এলাকায় ধানশোলা ও নয়াবসত দুই গ্রামের মাঝখানে একটি ছোট্ট তপশিলি উপজাতিদের জন্য আবাসিক স্কুল পন্ডিত রঘুনাথ মুর্মু আবাসিক বিদ্যালয়। চারশোর কিছু বেশি ছাত্রছাত্রী এখানে পড়াশোনা করে। জঙ্গলাকীর্ণ, পঠন-পাঠনের উপযুক্ত ও নয়াবসত শহর থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে স্কুলটির অবস্থান। এই স্কুলটি আগে নয়াবসত হাইস্কুলে চলতো। মাত্র কয়েক বছর হল এখানে স্কুলের স্থায়ী ভবন ও সকল পরিকাঠামো নির্মাণ হয়েছে। কখনো ছোট্ট শৌচালয়ে জামা কাপড় কাচা নিয়ে সমস্যা সম্মুখীন হয়েছেন তপশিলি উপজাতির ছাত্র-ছাত্রীরা বানানো হয়েছে পাতকুঁয়ো ও সুবিশাল চাতাল। কখনো তপশিলি উপজাতিদের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য উপযুক্ত করে বানানো হয়েছে ক্লাসরুম ছাত্র-ছাত্রীদের পঠন-পাঠনে যাতে কোন সমস্যা না হয় তার জন্য চেষ্টার কোনো কসুর করেনি প্রশাসন। এহেন পন্ডিত রঘুনাথ মুর্মু আবাসিক বিদ্যালয়ে এ ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত মানছে স্থানীয় প্রশাসনও। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে দোষী ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে।
ধানশোলার জঙ্গলে ঢাকা এই পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু বিদ্যালয় আগামী দিনে কী কৃতি ছাত্র-ছাত্রী উপহার দেবে নাকি আবার উঠে আসবে এ ধরনের আবার এক কোন খবরের শিরোনামে এখন সেদিকেই নজর সকলের।