OPERATION SINDOOR: ভারতীয় সেনারা ওড়ালো পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯ জঙ্গি ঘাঁটি
সিঙ্গুর টিভি নিউজ ডেস্ক :
জল্পনার অবসান ঘটলো। মঙ্গলবার (৬মে) গভীর রাতে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রায় ৯ জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। সীমান্ত পেড়িয়ে পাকিস্তানে ঢুকেই একের পর এক জঙ্গি ঘাঁটিকে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে দেড়শো কিলোমিটার দূরপাল্লার ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র । রাত দেড়টা নাগাদ অতর্কিতে ওই হামলা চালানো হয় বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
যদিও ৯ জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হলেও কত জঙ্গিকে খতম করা হয়েছে, সে বিষয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে কিছু জানানো হয়নি। ভারতীয় সেনার পক্ষ থেকে রাত ১.৫১ মিনিটে সমাজমাধ্যম ‘এক্স’ হ্যান্ডলে এএক পোস্টে ওই বিমান হমলা চালানোর কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘অবশেষে বিচার করা হল, জয় হিন্দ’।
https://x.com/adgpi/status/1919850036596199492?t=VOP1WOLKSENqIsmOM_5LSg&s=19
গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পহেলগাঁওয়ের বৈসরনে এক রিসর্টে অতর্কিতে হানা দিয়ে ২৬ নিরীহ পর্যটককে নৃশংসভাবে খুন করে পাকিস্তানি জঙ্গিরা। ওই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে ফুঁসে উঠেছে গোটা দেশবাসী। পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার দাবি উঠেছে। ওই দাবির মুখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আশ্বাস দেন, ‘পহেলগাঁওয়ের হামলাকারীদের কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। জঙ্গি ও তাদের মদতদাতাদের এমন শাস্তি দেওয়া হবে যে তারা কল্পনাও করতে পারবে না।’ ২৬ নিরীহ পর্যটকের হত্যালীলার পরেই জঙ্গিদের ইন্ধনদাতা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে মোদি সরকার। সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত রাখার পাশাপাশি পাকিস্তানি পণ্য আমদানি-রফতানির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আটারি সীমান্ত। ভারতীয় বন্দরে পাকিস্তানি জাহাজের প্রবেশের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। চিঠি লেন-দেনের ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। যদিও পহেলগাঁও কাণ্ডের ১৫ দিন কেটে যাওয়া সত্বেও ভারতীয় সেনা প্রত্যাঘাতের পথে না হাঁটায় সাধারণ মানুষের মনে খানিকটা অসন্তোষ দানা বাঁধতে শুরু করেছিল।
সেনা গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, কোটলি, ভাওয়ালপুর এবং মুজফফরাবাদের ৯টি জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ভাওয়ালপুরের ঘাঁটিতে লস্কর-ই-তৈয়বার প্রধান হাফিজ সইদ উপস্থিত ছিলেন। ভারতীয় সেনার তরফে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতের বিরুদ্ধে যেসব জায়গা থেকে জঙ্গি হামলার চক্রান্ত চলছিল, সেই ঘাঁটিগুলি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনও পাকিস্তানি সেনা কাঠামোকে নিশানা বানানো হয়নি। পাকিস্তানের পাল্টা হামলা প্রত্যাহত করতে ইতিমধ্যেই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম চালু করে দিয়েছে ভারত। ব্রহ্মোস ক্রুজ মিসাইল ভারতীয় সীমান্ত পার থেকে প্রায় দেড়শ কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে লস্কর-ই-তৈয়বা এবং জয়েশ-ই-মহম্মদের ঘাঁটিকে গুঁড়িয়ে দেয়। ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ধ্বংসের ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হানার পরে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবার বেশ কয়েক জায়গায় পাক সেনা গুলি চালাতে শুরু করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছে পাকিস্তান সরকার।
.
প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো বা পিআইবি’র তরফে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের এক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘খুব নিখুঁতভাবে পরিকল্পনা করেই সন্ত্রাসবাদীদের ডেরায় হামলা চালানো হয়েছে। পাকিস্তানের কোনও জনবসতিতে কিংবা সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়নি এবং ক্ষতিও করা হয়নি। লক্ষ্যবস্তু নির্বাচন করার ক্ষেত্রে যথেষ্টই সংযমের পরিচয় দেওয়া হয়েছে।’