প্রবল বর্ষণের জের, জলের তলায় মেদিনীপুর শহর পৌর প্রধানের ইস্তফা দাবি বিরোধীদের
সুমন পাত্র, পশ্চিম মেদিনীপুর : গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে মেদিনীপুর জেলা বরাবর অতি গুরুত্বপূর্ণ ভৌগলিক অবস্থানে বিদ্যমান। বঙ্গোপসাগরের জলীয় বায়ু কণা বৃষ্টিপাত ঘটায় গোটা মেদিনীপুর জুড়ে। তেমনই মেদিনীপুরে বৃষ্টি চলছে বেশ কয়েকদিন ধরে, মঙ্গলবারও তার ব্যতিক্রম হলো না। প্রবল বৃষ্টিতে ডুবলো মেদিনীপুর। জল উপছে পড়ল দোকান থেকে বাড়ির উঠোন পর্যন্ত।
অন্যান্য দিনের মতো এদিনও জল নিকাশে নামেন পৌরসভার কর্মীরা কিন্তু নিকাশী নালা বন্ধ থাকায় বেশ বেগ তাদের। এ নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ। বাড়ির আবর্জনা থেকে শুরু করে মেদিনীপুরের নাগরিকরা বেশ কিছু এমন সামগ্রী নিকাশী নালার মধ্যে ফেলছেন যে জল পারাপারের সমস্যা হচ্ছে। জনগণ সচেতন না হলে কিছু করা যাবে না। আর এই নিয়ে উদাসীন পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খানও। তিনি মূলত ভোট ব্যাংকের কারণে এমনটা করছেন বলে অভিযোগ। এদিন মেদিনীপুর শহরের ছয় নম্বর ওয়ার্ডে বাড়ি তৈরীর সামগ্রী ইট পাথর চিপস নিকাশী নালার মধ্যে দিয়ে আটকে দেওয়ায় নিকাশী নালা উপচে জল ঢুকে পড়ে সবিতা প্রধানের বাড়িতে। তার বাড়ির শয্যা কক্ষ ছাড়িয়ে নিকাশী নালার জল ঢুকে পড়ে দেবতার উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট করা কক্ষটিতে। যা নিয়ে তিনি যথেষ্ট খুব প্রকাশ করেন। পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে দেখা যায় রাস্তার দুপাশে দোকানের ভিতর পর্যন্ত জল ঢুকে আসছে। এই প্রসঙ্গে স্থানীয় এক দোকানদার অঞ্জন মন্ডল বলেন দোকানে এমন কিছু জিনিস আছে জলে ভিজলে সমস্যা হবে। জানিনা সেসব জিনিস কি অবস্থায় আছে। তার উপরে নর্দমার জল। নষ্ট না হলেও যে দুর্গন্ধ ছড়াবে ক্রেতা নিতে চাইবে না।
এই প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা স্তরের নেতা সমিত দাসের তরফে জানানো হয়েছে। মেদিনীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান, চেয়ারম্যান হওয়ার পর প্রতিটি নিকাশী নালার আর কোনরূপ সংস্কার করেনী। এমনকি নিকাশে নালার মধ্যে ময়লা আবর্জনা ফেলে নিকাশি নালা গুলিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। উনি পয়সার বিনিময়ে নিকাশী নালার উপরেই গুমটি বসানোর অনুমতি দিচ্ছেন। এরকম চলতে থাকলে নিকাশী নালার জলের ঢেউ আর দীঘার সমুদ্রে জলের ঢেউ তে কোনরূপ ফারাক থাকবে না।
সিপিএমের তরফে সুশান্ত ঘোষ বলেছেন নিকাশী নালা একটি শহরের উন্নতির জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শুধুমাত্র ভোট রাজনীতির কারণে এই নিকাশি নালা বন্ধ অনুচিত।
যদিও এই প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা জানিয়েছেন। বিষয়টা পৌরসভার সাথে সম্পর্কিত তাই এই বিষয়ে কিছু বলবো না। ঠিক কি ঘটেছে দেখতে হবে। তবে কয়েকদিন ধরে তুমুল একনাগাড়ে বৃষ্টি হওয়ায়। এমনটা হয়ে থাকতে পারে।
পৌরসভার তরফে জানা গেছে খুব শীঘ্রই মেদিনীপুরের নিকাশি নালা সংস্কার সংক্রান্ত একগুচ্ছ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে পৌরসভা।
এই আবহে দাঁড়িয়ে নিকাশী নালা বন্ধ থাকায় পরবর্তী বর্ষার জল কোথায় গড়াবে সেটাই এখন দেখার।


