চোখের সামনে মাকে খুন হতে দেখেছিল ছবছরের ছেলে! কিশোরের সাক্ষ্যেই চুঁচুড়ায় দোষী সাব্যস্ত বাবা।
স্ত্রীকে খুনের মামলায় স্বামী শেখ নজিবুলকে বুধবার দোষী সাব্যস্ত করেন হুগলি জেলা আদালতের তৃতীয় অ্যাডিশনাল সেশন জাজ কৌস্তব মুখোপাধ্যায়। এই মামলায় বৃহস্পতিবার সাজা ঘোষণা হল।
ছবছরের ছেলের সামনেই মাকে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করেছিলেন বাবা! ঘটনার নবছর পর চুঁচুড়া আদালতে বাবা দোষী সাব্যস্ত হলেন সেই ছেলের সাক্ষ্যেই। বৃহস্পতিবার এই মামলার রায় ঘোষণা করেন বিচারক।
আদালত সূত্রে খবর, ধনিয়াখালি থানার অন্তর্গত জামাইবাটি কাপগাছি গ্রামের বাসিন্দা শেখ নজিবুলের সঙ্গে ২০০৬ সালে ধনিয়াখালিরই চক-সুলতান গ্রামের সাবিনা বেগমের বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের দুই সন্তান হয়। এক ছেলে ও এক মেয়ে। বিয়ের কয়েক বছর পরে এলাকার এক মহিলার সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন নজিবুল। এই নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি চলছিল। তা চরমে ওঠায় ২০১৫ সালের ২৫ অগস্ট রাতে বালিশ চাপা দিয়ে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন তিনি। দুই সন্তানের সামনেই গোটা ঘটনা ঘটে। তখন ছবছরের ছেলে সাহিল বাবাকে বাধাও দিতে গিয়েছিল।
পরে সাবিনার বাবা মতিয়ার রহমানের অভিযোগের ভিত্তিতে নজিবুলকে গ্রেফতার করে ধনিয়াখালি থানার পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ২৩ ডিসেম্বর চার্জশিট পেশ করেন তদন্তকারী অফিসার। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ৪৯৮/এ, ৩০২, ২০১ ধারায় মামলা হয়। ১২ এপ্রিল ২০২২ সালে বিচারকের কাছে বাবার বিরুদ্ধে গোপন জবানবন্দি দেয় ছেলে। মোট ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
বুধবার হুগলি জেলা আদালতের তৃতীয় অ্যাডিশনাল সেশন জাজ কৌস্তব মুখোপাধ্যায় সেই মামলায় নজিবুলকে দোষী সাব্যস্ত করেন। আজ দোষীকে ৩৯৮/এ ধারায় তিন বছর জেল ও ৫০০০ টাকা জরিমানা সহ ৩০২ ধারায় ১০০০০ টাকা জরিমানা সহ সশ্রম যাবজ্জীবনের সাজা শোনান চুঁচুড়া আদালতের তৃতীয় অ্যাডিশনাল সেশন জাজ কৌস্তব মুখোপাধ্যায়।
২০১৫ সালের ২৫ আগস্ট অশান্তি চরমে ওঠে। ওই রাতে বালিশ চাপা দিয়ে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করে নজিবুল। সন্তানদের সামনে এই ঘটনা ঘটে। সাবিনার বাবা মতিয়ার রহমানের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত নজিবুলকে গ্রেফতার করে ধনিয়াখালি থানার পুলিশ। দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত চলার পরে ২০১৫ সালের ২৩ ডিসেম্বর মাসে চার্জশিট পেশ করে তদন্তকারীরা। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ৪৯৮/এ, ৩০২, ২০১ ধারায় মামলা রুজু হয়।২০২২ সালে বিচারকের কাছে বাবার বিরুদ্ধে গোপন জবানবন্দি দেয় অভিযুক্তের নাবালক ছেলে। মোট ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। তার পরেই অভিযুক্তের যাবজ্জীবনের সাজা শোনাল আদালত।
চুঁচুড়া আদালতের সরকারি আইনজীবী শঙ্কর গাঙ্গুলি বলেন, অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছেন বিচারক। মৃত সাবিনা বেগমের ১৩ বছরের ছেলে সাহিলের সাক্ষী এই মামলায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। যখন সাহিলের বয়স ৬ বছর তখন সে বিচারকের সামনে গোপন জবানবন্দি দিয়েছিল। এখন তার তেরো বছর বয়সে স্বাক্ষ্য দেয় সে। বুধবার হুগলি জেলা আদালতের তৃতীয় অ্যাডিশনাল সেশন জাজ কৌস্তব মুখোপাধ্যায় সেখ নজিবুলকে দোষী সাব্যস্ত করেন।বৃহস্পতিবার সাজা ঘোষণা করেন।