সিঙ্গুরের কৃষাণমান্ডি থেকে উন্নতমানের লাল লঙ্কা পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশে
সৌরভ আদক, সিঙ্গুর, হুগলী : জমি আন্দোলন থেকে ন্যানো বাঁচাও কিংবা টাটা তাড়াও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু সিঙ্গুর।
এবার সেই সিঙ্গুরের লাল লঙ্কা এবার বিদেশ যাত্রা করছে। বৈদেশিক মুদ্রার আমদানি ঘটতে চলেছে এবার সেই সিঙ্গুরের লাল লঙ্কার মাধমে।
সম্প্রতি সিঙ্গুরের কৃষানমান্ডি থেকে উন্নতমানের লাল লঙ্কা এবার পাড়ি দিচ্ছে বিদেশে। উন্নতমানের লাল লঙ্কা এবার জাপানে পাড়ি দিচ্ছে। দীর্ঘ প্রায় ৬ বছর ধরে চলছে রপ্তানি। এরইমধ্যে জাপানী সংস্থার নয় উদ্যোগ।
হুগলীর হরিপালে বিশেষ পদ্ধতিতে শুরু হয়েছে লাল লঙ্কার চাষ। এবার সেই লঙ্কার গুণমাণ পরীক্ষার জন্যে শ্যাম্পেল পাঠানো হয়েছে জাপানের সংস্থায়। সেখান থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার অপেক্ষায়। তার পরেই মিলবে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রার।
লাভবান হবার আশায় কৃষকরা।
হুগলীর সিঙ্গুর, এখানে জৈব পদ্ধতিতে করা হচ্ছে লাল লঙ্কার চাষ। ছয় বছর ধরে সেই উন্নতমানের লঙ্কায় সিঙ্গুরে কৃষাণমান্ডি থেকে রপ্তানি হচ্ছে জাপানে। এই লঙ্কার মাণ নিয়ে উৎসাহী জাপানী সংস্থা, তাই হরিপালে শুরু করেছে বিশেষ প্রোজেক্ট যেখানে বেছে নেওয়া হয়েছে দুজন কৃষককে।
এরপর পলিফার্মিং এর মাধ্যমে লাল লঙ্কার চাষ শুরু। মোট আট রকমের লঙ্কার চাষ হচ্ছে। এই চাষের জন্যে বীজ থেকে জৈব সার। চাষের প্রয়োজনীয় সরজ্ঞাম, সবই কৃষকদের দিয়েছে জাপানি সংস্থাটি। লঙ্কা বাগানে বসানো হয়েছে সৌরবিদ্যুৎ চালিত ক্যামেরা। রয়েছে আর্দ্রতা মাপার যন্ত্র। মাটির গুণমান মাপার যন্ত্র। প্রত্যেকটি গাছের গোড়ায় জল পৌঁছানোর জন্যে তৈরি করা হয়েছে পাইপ চ্যানেল।
কিভাবে চাষ করতে হবে তার খুঁটিনাটি লিখে দেওয়া হয়েছে বোর্ডে।
ইতিমধ্যে লঙ্কার শ্যাম্পেল পাঠানো হয়েছে জাপানে। সেখান থেকে সবুজ সংকেত পাবার অপেক্ষা। তারপর আরও বেশি অর্ডার। টন টন লাল লঙ্কা যাবে জাপানে।
কৃষক বলেন, এতদিন ধারণা ছিলো কৃষি মানে শুধু খাদ্যশষ্য উৎপাদন হবে, আর সেটা খেয়েই আমরা বেঁচে থাকবো। কিছু উদ্বৃত্ত হবে সেটা বেচবো। কিন্তু জাপানীরা এসে, আমাকে প্রথম শেখালেন, যে কৃষি একটা সুন্দর ব্যবসা। একটা নির্দিষ্ট কোয়ালিটির জিনিস তৈরি করো। সেটা মার্কেটিং করো। করে তোমার দরকারী খাদ্যশষ্য কিনে নাও মার্কেট থেকে। এখনও পর্যন্ত ১৬০ কেজি লঙ্কা আমরা পাঠাতে পেরেছি জাপানে। আমার কাছে Approx সারাবছরে ৩০০০ কেজি আমার থেকে নিতে চাইছে। শুধু আমার থেকে লঙ্কা নিতে চাইছে।
জাপানে লাল লঙ্কার চাহিদা প্রচুর। ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড থেকে লঙ্কা কেনে সেখানকার বিভিন্ন রেঁস্তোরা। দামও অনেক বেশি। সেখানে সিঙ্গুরে লাল লঙ্কার দাম অনেকটাই কম। তাই এখানে উন্নতমানের লঙ্কা উৎপাদনে নজর দিয়েছে জাপানী সংস্থা। চাষও হচ্ছে তাদের দেখিয়ে দোওয়া পথে। এখন অর্ডার পাওয়ার অপেক্ষা।
জাপানে যে রেস্টুরেন্ট আছে, চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, সেখানে লাল লঙ্কার প্রচুর ডিমান্ড। সবুজ লঙ্কা নয়, লাল লঙ্কা, তারা এই লাল ৬ ভিয়েতনাম বা থাইল্যান্ড থেকে প্রুচুর হাইপ্রাইসে কেনে। ৪০০/৫০০/৬০০/১০০০ টাকা কেজি। কিন্তু, আমাদের এখানে লঙ্কার ম্যাক্সিমাম কেজি ১০০ টাকা। সেটা যদি এক্সপোর্টের খরচ আরও ১০০টাকা ধরে নিই আমরা কেজিতে, জাপান ওটা সহজেই ৩০০ টাকাতে কিনতে পারছে। সুতরাং তারা নিজেদের প্রয়োজনে, রেস্টুরেন্টগুলোকে সাপ্লাই করার জন্যে ওদের যে বর্তমানে থাইল্যান্ড বা ভিয়েতনাম থেকে কিনছে, তার থেকেও কিন্তু কমপ্রাইসে আমাদের কে দিতে পারবে। মানে আমরা তাদেরকে সাপ্লাই করতে পারবো।
মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, কৃষক দুটে পয়সা পাক, সপই পয়সা পাওয়ার ব্যবস্থার ক্ষেত্রে আমাদের রাজ্য সরকারের উদ্যোগে যা ইকো কেএসডব্লু জাপানের এই সংস্থা তারা এই কাজ সিঙ্গুর থেকেই তারা করছে, এবং বাণিজ্যিকভাবে তারা লঙ্কা নিয়ে গিয়ে তারা টেস্ট করছে, এবং সেখানে টেস্টে অ্যালাউ হলেই বাণিজ্যিক ভাবে এখান থেকে রপ্তানি শুরু হবে।।